সর্জান পদ্ধতি : অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে যেখানে জলাবদ্ধতার কারণে পাট, ধৈঞ্চা, ডিপ ওয়াটার আমন ফসল ছাড়া স্বাভাবিকভাবে কোনো ফসল আবাদ করা সম্ভব হয় না সেখানে বিভিন্ন মাপের উঁচু বেড-বাঁধ তৈরি করে নিয়ে তাতে ফল চাষ উপযোগী করা হয়। দুইটি বেডের মধ্যভাগের মাটি খুঁড়ে বেডের দুই ধারে উঠিয়ে দিয়ে বেডগুলোকে সরেজমিন থেকে উঁচু করে নিয়ে বেড-বাঁধ ও নালা পদ্ধতির মাধ্যমে ফল-সবজি আবাদ করার এ পদ্ধতি সর্জান নামে পরিচিত। জমির অবস্থান এবং সেখানে কি ফসল চাষ করা হবে, স্থানভেদে ও এলাকার চাষির পছন্দ বিবেচনায় বেডের চওড়া ও নালার গভীরতা ঠিক করে নেয়া হয়। ভূমির অবস্থা অনুসারে এ বেড লম্বায় ২০ ফুট থেকে ২০০-৩০০ ফুট পর্যন্ত করা যায়।
এলাকার অবস্থা ও জমির আকার আকৃতি বুঝে এ পদ্ধতির জন্য বেডের বা বাঁধের উচ্চতা ও চওড়া ঠিক করা হয়। দুইটি বেডের মধ্যবর্তী নালার চওড়া ও গভীরতা সেভাবে চূড়ান্ত করা হয়। নোয়াখালী জেলার চরে যেসব অংশে কেবল মৌসুমি সবজি আবাদ করা হয় সেখানে ২-৩ ফুট চওড়া বেড এবং চওড়ায় ও গভীরতায় ২-৩ ফুট দেয়া হয়। বিশেষ করে যেসব উপকূলীয় এলাকায় যেখানে জোয়ার-ভাটার প্রভাব রয়েছে সেখানে এ মডেলের বিভিন্ন সংস্কার অবলম্বনে ফল-সবজি চাষ অতি জনপ্রিয়। নালা জোয়ারের পানিতে ভরে গেলে, এমনকি কয়েক ঘণ্টা তলিয়ে গেলেও আবাদকৃত নির্বাচিত ফল-সবজির তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। বিশেষ করে নারিকেল গাছ এ ধরনের পরিস্থিতিতে খুব সহজেই বেড়ে উঠে, প্রচুর ফল দানে সক্ষম হয়। নালায় পানি থাকায় বেডে রোপিত গাছগুলোতে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। গাছগুলো নালার পানি পরোক্ষভাবে শুষে এবং ভালোভাবে বেড়ে উঠে এবং প্রচুর ফল দানে সক্ষম হয়।